অঞ্জন চৌধুরীর মাত্র দুটো ছবির জুটি আমরা। ‘অভাগিনী’ আর ‘হীরক জয়ন্তী’। দুটো ছবিই সেই সময়ে ব্লকবাস্টার। তখন আমার চুমকির সঙ্গে প্রেম। বিয়ের কথা চলছে। আমার মা-বাবা ভারী পছন্দ করতেন ওকে।
একইভাবে অঞ্জনদা-বৌদিও আমাকে। আচমকা কোনও কারণ ছাড়াই আমরা আলাদা। সম্পর্ক টিকল না। তারপর আমরাও আর জুটি বেঁধে অভিনয় করিনি। আজ আমরা দু’জনেই আরও পরিণত। এখন মাঝেমধ্যে আফসোস হয়, পেশাজীবনে ব্যক্তিজীবনের ছায়া পড়তে না দিলেই মনে হয় ভালো হতো। তাহলে অঞ্জন চৌধুরীর আরও ছবির নায়ক হতে পারতাম। বিপরীতে চুমকিই থাকত।
আনন্দবাজারকে কথাগুলো বলছিলেন অভিনেতা জয় বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, চুমকিকে ভালো লাগার কারণ আছে। খুব ভালো মেয়ে, খুবই ঘরোয়া, আন্তরিক। পরিবারের সকলের প্রয়োজন মিটিয়ে শুটিংয়ে যেত। ফিরে একইভাবে বাকিদের দেখভাল করত। তিনতলা বাড়ির সমস্ত রক্ষণাবেক্ষণ তার দায়িত্বে হতো। অঞ্জনদা কী খাবেন, কতটা খাবেন, কখন, কী ওষুধ খাবেন— সব সামলাত সে।
‘একইভাবে আমার মা-বাবার প্রতিও ওর ভীষণ শ্রদ্ধা ছিল। চুমকি আসলে বড়দের খুবই শ্রদ্ধা, সম্মান করে। এ রকম মেয়েকে কোনও ছেলের ভালো না লেগে পারে? স্বাভাবিকভাবেই ওর প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলাম। সেই প্রেম ছায়া ফেলেছিল পর্দাতেও।’
জয় আরও বলেছেন, ওর সঙ্গে দুটো ছবিতে কাজ করে বুঝেছি, চুমকি অভিনয় রক্তে নিয়ে জন্মেছে। ফলে, পর্দায় খুব সাবলীলভাবেই অভিনয় করে। নিজের অভিনীত চরিত্র অনায়াসে আত্মস্থ করতে পারে। নায়িকা হতে গেলে অভিনয়ের পাশাপাশি সৌন্দর্যেরও একটা বড় ভূমিকা থাকে। রুপালি পর্দায় সুন্দর দেখানোও জরুরি। হ্যাঁ, সেই অর্থে চুমকি হয়তো অপরূপা নয়, কিন্তু ওর চোখেমুখে খুব লালিত্য। একের পর এক ছবি সফল হতেই চুমকি নিজের যত্ন নিতে শুরু করেছিল। খুব পরিশ্রম করে বাড়তি মেদ ঝরিয়েছিল। সে সময় নায়িকাদের গড়ন লাবণ্যময়ী ছিল। ফলে, দর্শক পছন্দ করেছিল চুমকিকে।
সবশেষ নিজের প্রাক্তনকে নিয়ে এই অভিনেতা বলেন, এত ভালো মেয়ে, কিন্তু অনেক লড়াই করতে হয়েছে। মা-বাবা, ভাইকে হারিয়ে ফেলেছে। প্রথম স্বামী লোকেশ ঘোষের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর যাত্রার এক প্রথম সারির পরিচালকের সঙ্গে দ্বিতীয় বিয়ে হয়েছিল চুমকির। তিনিও প্রয়াত। জন্মদিনে তাই ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা, খুব ভালো থাকুক চুমকি। ওর ভালো হোক। বাকি জীবন যেন শান্তিতে কাটে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন