সাইফের ওপর হামলা
১৫ জানুয়ারি মধ্যরাতে সাইফ আলী খানের ওপর হামলা হয়েছে। পরদিন ১৬ জানুয়ারি ভোরে খবরটি প্রকাশ্যে আসে। বান্দ্রার বাড়িতে সাইফের শরীরে দুর্বৃত্তরা ছুরি দিয়ে ছয়বার কোপ বসিয়েছে।
অটোরিকশায় হাসপাতালে
রক্তাক্ত সাইফকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন তাঁর সন্তান ইব্রাহিম আলী খান। ইব্রাহিম আলাদা বাড়িতে থাকেন। বাবার ওপর হামলার খবর পেয়ে তড়িঘড়ি বাবার বাড়িতে পৌঁছান ইব্রাহিম। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য গাড়ি খুঁজে পাননি ইব্রাহিম। ১৫ জানুয়ারি দিবাগত রাত সাড়ে তিনটা নাগাদ তাড়াহুড়ো করে বাবাকে অটোরিকশায় চাপিয়ে মুম্বাইয়ের লীলাবতী হাসপাতালে ভর্তি নেন তিনি।
কারিনার বিবৃতি
১৬ জানুয়ারি সকালে এক বিবৃতিতে স্ত্রী কারিনা কাপুর খান বলেছেন, ‘সাইফ হাতে আঘাত পেয়েছে। আর তাই হাসপাতালে ওর চিকিৎসা চলছে। পরিবারের বাকি সদস্যরা ভালো আছে। পুলিশ ইতিমধ্যে তদন্তের কাজ শুরু করে দিয়েছে। আমরা মিডিয়া আর ভক্তদের ধৈর্য ধরার জন্য আবেদন জানাচ্ছি। অনুগ্রহ করে এ নিয়ে কেউ গুজব ছড়াবেন না। এ ঘটনায় আপনারা সবাই যে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন এবং দুশ্চিন্তায় আছেন, এ কারণে আপনাদের ধন্যবাদ।’
অস্ত্রোপচারের পর আইসিইউতে
১৬ জানুয়ারি সাইফের শরীরে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। এরপর তাঁকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেওয়া হয়। লীলাবতী হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী নীরজ উত্তমনি জানিয়েছিলেন, সাইফ শরীরে ছয়টি আঘাত পেয়েছেন। তাঁর মেরুদণ্ডের কাছে গভীর ক্ষত আছে। সাইফের অস্ত্রোপচার করেছেন নিউরোসার্জন নিতিন ডাঙ্গে। সাইফ আলী খানকে হাসপাতালে দেখতে ছুটে গিয়েছিলেন স্ত্রী কারিনা কাপুর খান, বোন সোহা আলী খান, কন্যা সারা আলী খান; রণবীর কাপুর, আলিয়া ভাট, পরিচালক সিদ্ধার্থ আনন্দ।
হামলাকারীকে বান্দ্রা স্টেশনে দেখা গেছে
১৬ জানুয়ারি ভোর থেকেই তদন্তে নামে পুলিশ।তখন মুম্বাই পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সন্দেহভাজন অভিযুক্তকে হামলার পর বান্দ্রা স্টেশনের কাছে দেখা গেছে। বান্দ্রা স্টেশনসংলগ্ন সিসিটিভিতে ধরা পড়েছে হামলাকারী। মুম্বাই পুলিশের দল পালঘর জেলার বাসাই, নালাসোপারাসহ অন্যান্য স্থানে হামলাকারীকে খুঁজে বের করার কাজে লেগে পড়েছে।
একজন গ্রেপ্তার
১৯ জানুয়ারি মুম্বাই পুলিশ জানিয়েছে, শরিফুল ইসলাম নামে সেই অভিযুক্ত বাংলাদেশি। মহারাষ্ট্রের থানের কাছে অবস্থিত একটি ম্যানগ্রোভ জঙ্গল থেকে আটক করা হয় তাঁকে।
পাঁচদিনের রিমান্ডে শরিফুল
১৯ জানুয়ারি শরিফুলকে বান্দ্রা কোর্টে তোলা হয়। এরপর আদালত তাঁকে পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজত মঞ্জুর করেন।
হাসপাতাল থেকে ফিরলেন সাইফ
হাসপাতালে ভর্তির পাঁচ দিন পর ২১ জানুয়ারি বাড়িতে ফিরেছেন সাইফ আলী খান। ফেরার সময় পরনে সাদা শার্ট, জিনস। বাঁ হাতের কবজিতে বাধা ব্যান্ডেজ। ছোট করে ছাঁটা চুল, পরিষ্কার কামানো দাড়ি।
সেই অটোচালকের সঙ্গে দেখা করেছেন সাইফ
অভিনেতাকে শুধু দ্রুততার সঙ্গে হাসপাতালেই পৌঁছে দেননি, ভাড়াও চাননি অটোচালক ভজন সিং রানা। হাসপাতাল ছাড়ার আগে সেই অটোচালক ভজনের সঙ্গে দেখা করেন অভিনেতা। পাঁচ মিনিটের এ সাক্ষাৎকারে সাইফ ওই রাতের সাহায্যে এগিয়ে আসার জন্য ভজনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি ভজনকে জড়িয়ে ধরে ধন্যবাদ জানান। ওই সময় সাইফের মা অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুরও উপস্থিত ছিলেন। তিনিও ছেলের সাহায্যে এগিয়ে আসার জন্য ভজনকে ধন্যবাদ জানান।
সাইফের বাড়ির সিসিটিভির ফুটেজে দেখা ব্যক্তি আমার ছেলে নয়: শরিফুলের বাবা
২৩ জানুয়ারি শরিফুল ইসলামের বাবা রুহুল আমিন ফকির প্রথম আলোকে বলেছেন, পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তি তাঁর ছেলে শেহজাদ হলেও সিসিটিভি ফুটেজে যাকে দেখা গিয়েছিল, সে অন্য কেউ। তাঁর ছেলে নন।
রুহুল আমিন ফকির মুঠোফোনে জানিয়েছেন, ‘আমার ছেলে কেমনে করল, আমি তা বুঝে উঠতে পারছি না। সিসিটিভিতে যে ছেলেটিকে দেখছি, সে আমার ছেলে নয়। পুলিশ যাকে গ্রেপ্তার করেছে, সে-ই আমার ছেলে। সিসিটিভিতে যে ছেলেটিকে দেখা যাচ্ছে, তাঁর মুখের ধরন আর চুলের স্টাইলের সঙ্গে আমার ছেলের কোনো মিল নেই। আমার ছেলে উলটে চুল আঁচড়াত। কপাল পর্যন্ত চুল রাখত না।’
আরও পাঁচ দিন পুলিশের হেফাজতে
অভিযুক্ত শরিফুল ইসলামকে আরও পাঁচ দিন হেফাজতে পেয়েছে পুলিশ। গতকাল মুম্বাইয়ের একটি আদালত এই আদেশ দেন। ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত পুলিশের হেফাজতে থাকবেন শরিফুল। এর আগে পাঁচ দিন পুলিশের হেফাজতে ছিলেন তিনি।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন