স্বাধীনতা-উত্তর সময়ের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সংগীত ব্যক্তিত্ব আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলকে হারানোর ছয় বছর পার হয়ে গেল। আজ তাঁর ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী। সাড়ে তিনশ গানের এই সংগীত পরিচালক, জনপ্রিয় গীতিকার ও সুরকার এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা ২০১৯ সালে সবাইকে ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে যান। কর্মময় জীবনে তাঁর প্রতিটি সৃষ্টিকর্মে উঠে এসেছে দেশ, মাটি ও মানুষের কথা।
বুলবুলের জন্ম ১৯৫৭ সালের ১ জানুয়ারি ঢাকায়। ১৯৭০ সালের শেষ লগ্ন থেকে আমৃত্যু বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পসহ সংগীত শিল্পে সক্রিয় ছিলেন এই মানুষটি।
১৯৭১ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেন। যুদ্ধ থেকে ফেরার পর টানা দেড় দশক শুধু দেশের গান তৈরি করেছেন তিনি।
১৯৭৮ সালে ‘মেঘ বিজলি বাদল’ ছবিতে সংগীত পরিচালনার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেন। স্বাধীনভাবে গানের অ্যালবাম তৈরি করেছেন। তিন দশকেরও বেশি দীর্ঘ ক্যারিয়ারে বহুসংখ্যক চলচ্চিত্রের সংগীত পরিচালনা করেছেন তিনি। এর মধ্যে ‘নয়নের আলো’, ‘দেশপ্রেমিক’, ‘প্রেমের তাজমহল’, ‘আম্মাজান’, ‘ইতিহাস’ অন্যতম। সাবিনা ইয়াসমিন, রুনা লায়লা, সৈয়দ আব্দুল হাদী, এন্ড্রু কিশোর, সামিনা চৌধুরী, খালিদ হাসান মিলু, আগুন, কনকচাঁপাসহ বাংলাদেশি জনপ্রিয় সংগীতশিল্পীদের নিয়ে কাজ করেছেন তিনি।
‘সব কটা জানালা খুলে দাও না’, ‘সেই রেললাইনের ধারে’, ‘ও মাঝি নাও ছাইড়া দে ও মাঝি পাল উড়াইয়া দে’, ‘সুন্দর সুবর্ণ তারুণ্য লাবণ্য’র মতো জনপ্রিয় দেশাত্মবোধক গানগুলোতে তাঁর দেওয়া সুর বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে স্পন্দন তুলবে চিরদিন।
অভিনয়েও নাম লেখিয়েছিলেন তিনি। তাঁকে দেখা গেছে এ কিউ খোকন পরিচালিত ‘গুরু ভাই’ সিনেমায়। এতে তিনি নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন। সংগীতে অবদানের জন্য বুলবুল রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ সম্মাননা একুশে পদক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং রাষ্ট্রপতি পুরস্কারসহ অন্যান্য অসংখ্য পুরস্কার পান এই গুণী।
إرسال تعليق