‘রিকশা গার্ল’ সিনেমার কেন্দ্রে রয়েছে নাঈমা, যে ছবি আঁকতে পছন্দ করে। সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম বাবা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে শুরু হয় নাঈমার লড়াই। ছবি এঁকে যেহেতু পয়সা মেলে না, তাই রিকশা নিয়ে রাস্তায় নামে ও। নাঈমার জীবনসংগ্রামকে পর্দায় জীবন্ত করে তুলেছেন নভেরা রহমান।
গত সোমবার ‘বিনোদন’কে নভেরা বলেন, ‘অডিশনের শেষ পর্যায়ে এসে ছবিতে যোগ দিয়েছিলাম। সারা দেশের মোটামুটি ৩০০ জনের অডিশন নেওয়া হয়েছিল। আমার অডিশনে একটা রিকশা আনা হয়েছিল। তবে আমি রিকশা চালাতে পারতাম না; সেদিন আমি একদমই রিকশা চালাতে পারিনি। এরপর ছবির টিম থেকে আমাকে ডাকে। তখন আমার বয়স ২৩ কিংবা ২৪ বছর হবে।’
চরিত্রটি কতটা চ্যালেঞ্জিং
নাঈমা হয়ে উঠতে নভেরাকে অনেক পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। নভেরার ভাষ্যে, ‘প্রথমত, আমি ঢাকায় বড় হয়েছি, গ্রামের মেয়ে নই। দ্বিতীয়ত, জীবনে কোনো দিন রিকশা চালাইনি। ফলে চরিত্রটার সঙ্গে আমার তেমন কোনো মিল ছিল না। তবে একটা জায়গায় নাঈমার সঙ্গে আমার মিল ছিল। সেটা হলো, দুজনই আঁকাআঁকি পছন্দ করি।’
রিকশা চালানো শেখার অভিজ্ঞতা জানিয়ে নভেরা বলেন, ‘চরিত্রটি করতে গিয়ে আমার রিকশা চালানো শিখতে হয়েছে। নাঈমার মতো পুরান ঢাকায় আরও অনেক রিকশাচালক আছে। ওদের সঙ্গে আমি দেখা করেছি, আড্ডা মেরেছি। তাদের জীবনটাকে খুব কাছ থেকে জানার চেষ্টা করেছি। পরে নিকেতনের ভেতরে এক মাস ধরে রিকশা চালিয়েছি। জিমের কাপড় পরে নিকেতনে রিকশা চালাতাম। আমাকে পাহারা দেওয়ার জন্য পেছনে এডি (সহকারী পরিচালক) বসে থাকত।’
২০১৯ সালে শুরু হয়েছিল ‘রিকশা গার্ল’ ছবির কাজ।
ভালো লাগে জটিল চরিত্র
সহজ-সরল নয়, জটিল চরিত্র করতে পছন্দ করেন নভেরা। এর আগে মেড ইন বাংলাদেশ, একাত্তরের ক্ষুদিরাম-এর মতো বিকল্প ধারার চলচ্চিত্রে তাঁকে দেখা গেছে। এ ধরনের চরিত্র কি সচেতনভাবেই নির্বাচন করেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সচেতনভাবেই কাজ করার চেষ্টা করি। খুবই অল্প কাজ করি। যে চরিত্রের মধ্যে নিজেকে খুঁজে পাই, সেটা করি। আমার জটিল চরিত্র করতে ভালো লাগে। গতানুগতিক গল্পের নায়িকার চরিত্র এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। আশা করি, সামনে আরও ভালো কাজ আসবে। আমাদের পরিচালকেরা আরও জটিল চরিত্র নিয়ে ভাববেন।’
চলচ্চিত্রের বাইরে ‘পেট কাটা ষ’-এর প্রথম মৌসুমে অতিথি চরিত্রে কাজ করেছেন। আলাদাভাবে ওটিটিতে কাজের কোনো পরিকল্পনা আছে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘আলাদাভাবে ওটিটিতে কাজের পরিকল্পনা নেই। যদি কেউ ডাকে কিংবা কারও চিত্রনাট্য ভালো লাগে, তাহলে করব। এখন ওটিটিতে ভালো ভালো কাজ হচ্ছে। শিডিউল মিলে গেলে অবশ্যই কাজ করা হবে।’
মা অভিনেত্রী মোমেনা চৌধুরীকে দেখে অভিনয়ে এসেছেন নভেরা, ‘মা থিয়েটার করতেন। আমাকে কস্টিউমের ট্রাংকের ওপর শুইয়ে রেখে মঞ্চে গিয়ে নাটক করতেন। যাঁরা গ্রিনরুমে থাকতেন, তাঁরা আমার দেখাশোনা করতেন।’ মাত্র চার মাস বয়সে নভেরাকে প্রথম টেলিভিশনের পর্দায় দেখা যায়। ওই বয়সেই বাংলাদেশ টেলিভিশনের ‘দূরে কোথাও’ নাটকে অভিনয় করেন।
إرسال تعليق