প্রয়াত হলেন বাঙালি পরিচালকদের শিক্ষক

প্রয়াত হলেন বাঙালি পরিচালকদের শিক্ষক


-রেডিও শহর ডেস্ক
 

নদীর এপারে আমি, আর 

আমার বানানো ছবির ফ্রেমগুলো সব নদীর ওপারে।

তরুণ মজুমদার - 

১৯৩১সালের ৮ই জানুয়ারি 

পূর্ববঙ্গের  বগুড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। বাবা বীরেন্দ্রনাথ মজুমদার ছিলেন স্বাধীনতাসংগ্রামী। 


বগুড়া জেলায় ১৮৫৩ সালে প্রতিষ্ঠিত "বগুড়া জেলা স্কুল"এর ছাত্র ছিলেন তিনি।  স্কুলটি বগুড়া জেলার সবচেয়ে পুরাতন বিদ্যাপীঠ।


পরবর্তীতে কলকাতার স্কটিশচার্চ কলেজ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করেন।রসায়নের ছাত্র হলেও চলচ্চিত্র তৈরীর প্রতি আগ্রহ ছিল তরুণ মজুমদারের।

পুর্ববঙ্গের এক মফস্সল শহরের দেশত্যাগী পরিবারের সন্তান যাবতীয় চেনা ছকের জীবিকা বা যাপনকে পাত্তা না দিয়ে ১৯৫০-এর দশকে "সিনেমা বানাতে" চাইলেন।  অভিভাবকরাই ছেলেকে এগিয়ে দিলেন পর্দার জগতের দিকে।


 তাঁকে বলা হয় "বাঙালি পরিচালকদের শিক্ষক।"  চলচ্চিত্রের ভাষায় গল্প বলে দর্শককে বসিয়ে রাখার  জাদুমন্ত্র জানা ছিল এই বাঙালি পরিচালকের।  শিল্পীদের হীরের টুকরো তে পরিণত করতেন । মহুয়া, ঋতুপর্ণা, মৌসুমী চ্যাটার্জী,দেবশ্রী রায় টলিউডের এইসব নায়িকাদের কাছে  পরিচালক ছিলেন না, ছিলেন অভিভাবক। রুমকি রায়কে ‘দেবশ্রী’ নামটা দিয়েছিলেন তরুণ মজুমদার । বাঙালি দর্শকদের তাপস পালকে চিনিয়েছিলেন তিনি।।বাংলা চলচ্চিত্র তাঁর হাতে সমৃদ্ধ হয়েছে।


 ১৯৬৫ সালে ‘আলোর পিপাসা’ এবং’একটুকু ভালোবাসা: নামের দুটি ছবি তৈরি করেছিলেন তিনি। তারপর একের পর এক জনপ্রিয় এবং বাণিজ্য-সফল বাংলা ছবি উপহার দিয়েছেন তরুন মজুমদার। সেই তালিকায় রয়েছে- ‘কুহেলী’, ‘শ্রীমান পৃথ্বীরাজ’, ‘ফুলেশ্বরী’, ‘দাদার কীর্তি’, ‘আপন আমার আপন’, ‘গণদেবতা’, ‘চাঁদের বাড়ি’,’ভালবাসা ভালবাসা’, ‘আলো’....।

ভিন্নধারার রুচিসম্মত সামাজিক চলচ্চিত্র নির্মাণে তরুণ মজুমদার উজ্জ্বল নিদর্শন রেখে গেছেন। তাঁর ছবিতে রবীন্দ্রসংগীতের প্রয়োগ আর "যৌথ পরিবার" দর্শককে আবিষ্ট করে রাখে। 

 তিনি গত পঞ্চাশ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছেন।


২০২২।

সোমবার সকাল ১১.১৭ মিনিটে প্রয়াত হলেন  পরিচালক তরুণ মজুমদার। গত ১৪ জুন থেকে কিডনি ও ফুসফুসের সমস্যা নিয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।  মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। 

জীবনের উপান্তে ২০২১ সালে দু'খণ্ডে প্রকাশিত  তাঁর ৯০০ পৃষ্ঠার সুবিশাল স্মৃতিকথা - 

"সিনেমাপাড়া দিয়ে"।  জীবন আর বাংলা ছবির কত ঘটনা-কত  শত স্মৃতি সেখানে ঠাঁই পেয়েছে। 


যেখানে লেখা আছে

"নদীর এপারে আমি, আর আমার বানানো ছবির ফ্রেমগুলো সব নদীর ওপারে।"- যা আজ দ্বিতীয় বারের মতো আক্ষরিক অর্থেই সত্য!


ডেস্ক রিপোর্ট 

সৌজন্যে বাদুস পরিবার 

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন