তার সম্পর্কে বাঙালি প্রবাসীরা জানলে অবাক হয়ে যাবেন/;তিনি বাংঙালি প্রবাসীদের নিয়ে অনেক বেশি চিন্তা করতেন// জানুম

তার সম্পর্কে বাঙালি প্রবাসীরা জানলে অবাক হয়ে যাবেন/;তিনি বাংঙালি প্রবাসীদের নিয়ে অনেক বেশি চিন্তা করতেন// জানুম


-রেডিও শহর ডেস্ক
 

শিরিন আবু শাক্রা। এই আরব নারীর সঙ্গে বাংলাদেশের কোন সম্পর্ক নাই। বাংলা ভাষাও তিনি জানেননা। কিন্তু তার কাজে এক অলিখিত সম্পর্ক হয়ে গেছে বাংলাদেশের সঙ্গে। অসংখ্য ভাগ্যান্বেষী মানুষ ইউরোপ গিয়ে নিজেদের ভাগ্য গড়ার স্বপ্ন দেখে। দালালদের দেখানো স্বপ্নে এরা জমা হয় ভুমধ্যসাগরের দক্ষিণে আফ্রিকা মহাদেশের উত্তরের কোন দেশে। ভূমধ্যসাগরের ওপারেই ইউরোপ। নৌকায় তুলে ভাসিয়ে দেয়া হয় তাদের।  দিকভ্রান্ত হয়ে বা নৌকাডুবির ঘটনায় এদের ভাগ্য কিংবা প্রাণ বিপর্যয়ের খবর আমরা প্রায়ই শুনি। মর্মাহত হই। এদের অধিকাংশ বাংলাদেশের। ভাগ্য বদলাতে যাওয়া ভাগ্য বিড়ম্বিত বাঙালী। অমানবিকতার মাঝেও কিছু মানবিক স্বত্বা এখনও বিরাজমান। স্বেচ্ছাসেবী কিছু চিকিৎসক, নার্স, সমাজকর্মী আর কিছু মানবাধিকার কর্মী খাদ্যদ্রব্য, প্রাথমিক চিকিৎসা এবং ঔষধ নিয়ে, ভূমধ্যসাগরের নিরপেক্ষ (নো ম্যানস ল্যান্ড) এলাকায় টহলদেন। পথহারা বা ডুবন্ত নৌকা পেলে দ্রুত তাদের উদ্ধার করেন, প্রয়োজনীয় খাদ্য ও চিকিৎসা দেন। ২০১৫ সালে এমন একটি টিমের সংগে ৫ মাস ঘুরেছেন শিরিন আবু শাক্রা। সে সময় তিনি তার মোবাইল ক্যামেরায় ধারণ করেন ভাগ্যাহত মানুষের ছবি, তাদের কথা, চিকিৎসক আর সেচ্ছাসেবী মানবাধিকার কর্মীদের কথা। তার মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশের মানুষও। ধারণকৃত এসব ছবি ও কথা নিয়েই ২০১৭ সালে তিনি আরবি ভাষায় নির্মাণ করেন "ডকু ফিকশন" চলচ্চিত্র, যার ইংরেজি নাম "হোয়াট হ্যাপেনস টু এ ডিসপ্লেসেড আন্ট" (WHAT HAPPENS TO A DISPLACED ANT). বিশ্ব চলচ্চিত্রের আঙিনায় সাড়া ফেলে দেয় ছবিটি। বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসবে একটি পুরস্কারও জিতে নেয়। এই অংকন শিল্পী এবং চলচ্চিত্র নির্মাতার বাবা লেবাননের এবং মা সিরিয়ান। বসবাস করেন বৈরুতে। তিনি সাহিত্যে গ্র্যাজুয়েশন করেন, এরপর একই বিষয়ে ফ্রান্স থেকে মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন। এরই মধ্যে তিনি নির্মাণ করেছেন চারটি চলচ্চিত্র। তার "হোল্ড অন, মাই গ্ল্যামার" লেবাননের ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছে। তাঁর পরিচালনার দুটি এনিমেশন চলচ্চিত্র "ওয়াকিং ডিস্টেন্স" এবং "কনভারসেশন উইথ চেঞ্জ"। শিরিন আবু শাক্রা, কষ্টকর জীবন যাপন করেছেন ৫ মাস। ছবি বানিয়েছেন। বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরেছেন ভাগ্যাহত মানুষের কথা, যার মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশের মানুষও। নিজের অজান্তেই এই আরব্য নারী জড়িয়ে গেছেন বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে। কিন্তু, বাঙালী নারীদের সঙ্গে একজায়গায় প্রচন্ড মিল তার। বয়স লুকাতে চান এই আরব্য নারী। গুগল, তার বায়োগ্রাফি, ফেইসবুকে আপলোড করা তথ্যে কোথাও শিরিন আবু শাক্রার জন্মতারিখ নেই। উনি স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন ২০১০ সালে। জন্মদিন নাই বা জানলাম, ভুমধ্যসাগরে ৫ মাস একটি সেচ্ছাসেবী দলের সঙ্গে কাটিয়ে যিনি ভাগ্যান্বেষী মানুষের অমানবিক, মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করা মানুষের কথা চিত্রায়ন করতে গিয়ে, বাংলাদেশের মানুষের কথাও বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরেছেন, তাকে আমরা শুভেচ্ছা আর আমাদের ভালোবাসার কথা যে কোন সময়ই জানাতে পারি। ধন্যবাদ আরব্য নারী পরিচালক শিরিন আবু শাক্রা।

* ছবিটি ডাউনলোড করলেই ভাগ্য বিড়ম্বিত বাংলাদেশের মানুষের ছিবির স্ক্রিনশট পাওয়া যাবে।

ছবিঃ শিরিন আবু শাক্রা। ছবির একটি দৃশ্য। ছবির একটি পোস্টার। শিরিন আবু শাক্রার আঁকা একটি তৈলচিত্র।


ডেস্ক রিপোর্ট 

সৌজন্যে বাদুস পরিবার 

Post a Comment

Previous Post Next Post