-রেডিও শহর
রেডিও শহর ডেস্ক
নড়াইল। জেলাটির নাম শুনলেই মনে আসে চিত্রা নদীর পাড়, এস এম সুলতান, মাশরাফি বিন মর্তুজা, নড়াইলের রাজার বাধাই ঘাট ও ঘাটের পাড়ের ঐতিহাসিক মন্দির, আরো কত রাজবাড়ি, বীরশ্রেষ্ঠ নুর মোহাম্মদ।
নড়াইলকে ঘিরে দেশের চলচ্চিত্র ইতিহাসের সর্বকালের সেরা ছবি হচ্ছে চিত্রা নদীর পাড়ে। ৪৭ থেকে শুরু করে ৬০ এর দশক পর্যন্ত সরকারের পরোক্ষ সমর্থনে হিন্দু অধ্যুষিত নড়াইল থেকে একের পর একের দেশ ছেড়ে ভারত পাড়ি জমানো শরনার্থীদের ভীড়েও কিছু মানুষ ছিলেন যারা চিত্রা নদীর পাড়ের মায়া ছেড়ে চলে যেতে চাননি। কিন্তু বাস্তবতা ছিলো ভিন্ন। সেইরকম গল্প নিয়েই সিনেমাটি তৈরি।
সবাই সাবলীল অভিনয় করেন সিনেমাটিতে। সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী ও সমন্বয় বাদের উপর ভিত্তি করে তৈরি সিনেমাটি। সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্র ছিলেন শশীভূষণ।
শশীভূষণের মত আরেকজন উকিলকে দেখা যায়, তার নাম শামসুদ্দীন (আমিরুল হক চৌধুরী)। তিনিও শশীভূষণের মতই সমন্বয়বাদী (syncretic)। শশীর মৃত্যুর আগে তিনি শশীদের বাড়িতে প্রায়ই আসতেন। কথা বলার বিষয় থাকতো ঐ একটাই, দেশে হচ্ছেটা কী। শশীভূষণ বন্ধু শামসুদ্দীনকে জানাতেন, মুসলমান প্রতিবেশী তাকে ইঙ্গিতে বাড়ি ছেড়ে দিতে বলছেন। এ নিয়ে আক্ষেপ করতেন শশীভূষণ। শামুসদ্দীন তখন বলতেন কি করে পরিচিত অনেক উকিল আইনের মারপ্যাঁচ দিয়ে বড় বড় বাড়ি দখল করে নিচ্ছে পানির দরে। তখন শশীভূষণ ঠাট্টা করে শামসুদ্দীনকে জিজ্ঞেস করেন, সস্তায় যেহেতু বাড়ি কিনে অনেকে বড়লোক হয়ে যাচ্ছে, তার কী অবস্থা।
উত্তরে শামসুদ্দীন বলেন, ‘না ভাই অন্যের জিনিসে আমার লোভ নেই, ওতে বরকত হয় না, নিজে যা পারি হালালভাবে উপার্জন করে নেই। জব্বার উকিল কি বলে জানো, আরে আমি নাকি হিন্দুঘেষা, এদেশে এখন দেখি হক কথা বললে ওই টাইটেলই জোটে।’ এই সংলাপ থেকেই বোঝা যায়, হিন্দুদের ওপর যা চলছিল তা সমর্থন করতেন না শামসুদ্দীন। এছাড়া শশীভূষণের সাথে তার বন্ধুত্ব, হামলা হতে পারে এমন শঙ্কাজনক পরিস্থিতিতে শশীভূষণের মেয়ে ও বড় বোনকে তার বাড়িতে আশ্রয় নেয়ার পরামর্শ দেয়া ইত্যাদি থেকেও বোঝা যায় শামসুদ্দীন বহু ধর্মের মানুষের মিলেমিশে থাকাটাকেই সমর্থন করতেন। যেহেতু তার বৈষয়িক লোভ ছিল না, অন্তত হারাম উপায়ে উপার্জনের লক্ষ্য ছিল না, তাই সাম্প্রদায়িকতা নয়, মিলেমিশে থাকার পক্ষেই ছিলেন তিনি।
১৯৯৯ সালের জাতীয় পুরস্কার রেকর্ড সংখ্যক ৭টি পুরস্কার পায় এই সিনেমাটি।
ইউটিউবে দেখে নিতে পারেন ব্রিটিশ ওয়েবসাইটের মতে বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা দশ সিনেমার পুরো অংশটুকু। এখানে ছবির চুম্বকাংশ তুলে ধরলাম।
ভিডিও কৃতিত্ব : bitansha rubel / তানভীর মোকাম্মেল স্যার।
আফসানা মিমি অসাধারণ অভিনয় করেছেন সিনেমাটিতে।
এই ছবির প্রশংসা করে শেষ করা যায় না, কারন ছাড়াই এটি এত প্রশংসা সম্মাননা পায়নি।
সৌজন্যে বাদুস পরিবার
إرسال تعليق