-রেডিও শহর ডেস্ক
কামরুল আলম খান খসরু। আমাদের প্রিয় খসরু ভাই। এই বীর মুক্তিযোদ্ধা ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ছিলেন ঢাকা অঞ্চলের গেরিলা বাহিনীর কমান্ডার। ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের হয়ে, প্রদত্ত নকশা অনুযায়ী, তিনিই রাতের আঁধারে পতাকার কাপড় কিনেছিলেন, দর্জি ডেকে সেলাই করে এনে হস্তান্তর করেছিলেন যা, ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে, ৩ মার্চ পল্টন ময়দানে উত্তোলন করা হয়। তিনিই প্রথম একটি রাইফেল দিয়ে আকাশে ফাঁকা গুলি করে জানান দেন যে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর নির্দেশ পেলেই এই জাতি যুদ্ধ করতে প্রস্তুত। পতাকা নিয়ে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের যে ক'জন ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে গিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর কাছে পতাকা হস্তান্তর করেন, তাদের মধ্যে তিনিও একজন। পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১০ জানুয়ারি ফিরে এলে, বিমান বন্দর থেকেই তিনি তাঁর গাড়ি বহরে সঙ্গে ছিলেন। অস্ত্র জমা দেবার পর এই বীর মুক্তিযোদ্ধা জড়িয়ে পড়েন সাংস্কৃতিক অংগনে। এ দেশের প্রথম মুক্তিযুদ্ধের ছবি, "ওরা ১১ জন" এর নায়ক তিনি। "সংগ্রাম" সহ আরও বেশ কিছু ছবিতে অভিনয় করেছেন খসরু। স্বাধীন দেশের প্রথম সম্পুর্ণ রঙিন চলচ্চিত্র "বাদশা", এতে নায়কের দ্বৈত চরিত্রে তিনিই অভিনয় করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট ইতিহাসের নিকৃষ্টতম সেই পৈশাচিক ঘটনার পর তিনি একরকম প্রকাশ্যেই প্রতিবাদী হন। তিনি বলেছিলেন, 'আমি তো যোদ্ধা। কার নির্দেশে যুদ্ধ করবো? যার নির্দেশে যুদ্ধ করেছিলাম তিনি সপরিবারে নেই। আছেন শুধু তাঁর দুই কন্যা, তাঁরাও বিদেশে। যোগাযোগের কোন উপায় নেই। কে আমাকে নির্দেশ দেবে? তবুও বেরিয়েছিলাম।" এ সময় ধরে নিয়ে গ* উ~লি করা হয় খসরু ভাইকে। লাগে বুকের বাম পাশে। তাঁর আরেক ভাই তখন সেনা কর্মকর্তা। জানতে পারেন। দ্রুত নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। পাহারা থাকতো। দীর্ঘ চিকিৎসার পর, কিছুটা সুস্থ হয়ে পালানোর পথ খুঁজতে থাকেন এই গেরিলা কমান্ডার। কিছু হাসপাতাল কর্মীর সহায়তায় একদিন পালিয়ে যান বিদেশে। অনেক বছর পর দেশে ফেরেন তিনি। এমন সব ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দিতে গ্রন্থ রচনার প্রয়োজন। ফেইসবুকের পরিসরে সেই অবকাশ নাই। আজ এই বীর মুক্তিযোদ্ধার জন্মদিন। ১৯৪৭ সালের ১ জুলাই তিনি ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। শ্রদ্ধা, শুভেচ্ছা, ভালোবাসা এবং অভিনন্দন জনাব খসরু খান।
ডেস্ক রিপোর্ট
সৌজন্যে বাদুস
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন