শক্তিমান অভিনেতা রইসুল ইসলাম আসাদ সম্পর্কে জানুন

শক্তিমান অভিনেতা রইসুল ইসলাম আসাদ সম্পর্কে জানুন


-রেডিও শহর ডেস্ক
 

অভিনয়ের সার্থক  নায়ক: কিংবদন্তি  রাইসুল ইসলাম আসাদ


প্রমত্তা পদ্মা নদীর বুকে যে শক্ত হাতে নৌকার বৈঠা ধরতে পারে জেলেপাড়ার সেই সংগ্রামী জেলে কুবেরের সঙ্গে  প্রথাবিরোধী তারুণ্যের প্রতীক সেই 'চলো না ঘুরে আসি' ছেলেটির জীবনধারার পার্থক্য অনেক। আবার কুসংস্কারচ্ছন্ন অন্ধবিশ্বাসী মজিদ থেকে  লালন সাঁই এই বৈচিত্র্যকে যিনি ধারণ করতে পারেন নিজের মধ্যে, সার্থকভাবে রূপায়িত করতে পারেন পর্দায় আর স্থায়ী আসন গড়ে নেন দর্শক হৃদয়ে তিনিই সার্থক অভিনেতা।বাংলাদেশের যে কয়েকজন মুষ্ঠিমেয় অভিনয় শিল্পী মঞ্চ, বেতার, টিভি ও চলচ্চিত্রে সমানভাবে সফল তাঁদের মধ্যে নি:সন্দেহে উনার নাম  প্রথম সারিতে থাকবে,তিনি বাংলাদেশের অভিনয়জগতের উজ্জ্বল নক্ষত্র রাইসুল ইসলাম আসাদ।


 ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযু*দ্ধে বীরত্বের সঙ্গে যু*দ্ধ করেন আসাদ,তিনি  ঢাকায় গেরিলা যু*দ্ধে অংশ নিয়েছিলেন।সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন তিনি। সেই সময় মঞ্চে যে এক দল তরুণ প্রতিভাবান নাট্যকর্মীর আবির্ভাব ঘটে তাঁদের মধ্যে তিনি অন্যতম।এরপর টেলিভিশন জগতে  ইডিয়ট,সময় অসময়, সংশপ্তক, পাগড়ি,শাহজাদীর কালো নেকাব সহ বেশ কিছু বিখ্যাত নাটকে অভিনয় করেন।বাংলা নাটকে তিনি 'মধু পাগলা' হিসেবে পরিচিত।


খান আতাউর রহমানের 'আবার তোরা মানুষ হ' চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে সিনেমা জগতে পা রাখেন,এরপর সৈয়দ সালাউদ্দিন জাকীর প্রথাবিরোধী বিখ্যাত  ছবি 'ঘুড্ডি' তে অভিনয় করে ব্যাপক আলোচিত ও জনপ্রিয় হন। যৌথ প্রযোজনায় গৌতম ঘোষের বিখ্যাত ছবি 'পদ্মা নদীর মাঝি' তে কুবের চরিত্রে অনবদ্য অভিনয়ে আবার নতুনকরে আলোচিত ও প্রশংসিত হন,উপকূল অঞ্চলের প্রাকৃতিক দূর্যোগের সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে থাকার গল্প নিয়ে মোরশেদুল ইসলামের 'দুখাই' ছবিতে নাম ভূমিকায় অসাধারণ অভিনয় তাকে নিয়ে গেছে কিংবদন্তীদের আসনে। একে একে করতে থাকেন সুরুজ মিয়া,আয়না বিবির পালা, অন্যজীবন,নদীর নাম মধুমতি,হঠাৎ বৃষ্টি,চুপি চুপি,লালসালু,কীত্তনখোলা,আধিয়ার,লালন,ঘানি,মনের মানুষ,আমার বন্ধু রাশেদ,মৃত্তিকা মায়ার মত প্রশংসিত চলচ্চিত্র।বাংলাদেশের বিকল্পধারার চলচ্চিত্রে তিনিই সবচয়ে সমুজ্জ্বল।এছাড়া নতুন বউ,পিতা মাতা সন্তান,প্রথম প্রেম,তুমি সুন্দর,সত্যের মৃত্যু নেই,মধুর মিলন,বিচার হবে,রঙ্গীন সুজন সখি,স্বপ্নের পৃথিবী সহ বেশকিছু বাণিজ্যিক ধারার চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।নায়ক না হয়েও যিনি নায়কদের ঘাড়ে নি:শ্বাস ফেলেছেন। যৌথ প্রযোজনার ছবিতের বদলৌতে কলকাতায় বেশ সুপরিচিতি গড়ে উঠে।বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের লাল দরজা,উত্তরা,নবারুন চট্টোপাধ্যায়ের 'মনসুর মিয়ার ঘোড়ায়' অভিনয় করেন,এছাড়া 'পতঙ্গ' নামে একটি হিন্দি ছবিতেও অভিনয় করেন তিনি। গহর গাছী উনার অভিনীত অন্যতম সেরা নাটক,আছে সোনালী ডানার চিল,কূপের মত নাটক।


বর্ণিল অভিনয় জগতে পেয়েছেন একুশে পদক, আজীবন সম্মাননা সহ সাতবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার,আরো পেয়েছেন মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার সহ বেশকিছু বেসরকারি পুরস্কার। ব্যক্তিজীবন ও চলচ্চিত্র জীবনে নিজেকে আরো বর্ণিল করুক,এই প্রত্যাশা করি।


১৯৫৩ সালের আজকের এইদিনে জন্মগ্রহণ করা এই প্রিয় অভিনেতা আজ পেরোচ্ছেন জীবনের ৬৯ টি বছর,রইল শুভকামনা।


ডেস্ক রিপোর্ট 


সৌজন্যে বাদুস পরিবার

Post a Comment

أحدث أقدم