//হৃদয় বিদারক ঘটনাটি ১৯৮৮ বন্যার//

//হৃদয় বিদারক ঘটনাটি ১৯৮৮ বন্যার//


-রেডিও শহর ডেস্ক
 

১৯৮৮ এর বন্যা। চারদিকে থই থই পানি। ঘরের চালা সমান। কলার ভেলায় চলাচল করে মানুষ। যাদের নৌকা আছে তারা নৌকাতে। বন্যার পানির সাথে প্রচুর মাছ। অনেক বড়ো বড়ো সাইজের রুই, কাতলা, বোয়ালসহ নাম না জানা মাছ। গ্রামের প্রত্যেক পরিবারে কুঁচ, টেঁটা থাকতো। পানিতে আঁওয়াজ পেলেই কুঁচ মেরে মাছ ধরতো সবাই।

সিরাগঞ্জের সালাম তেমন একজন পানিবন্দী মানুষ। গভীর রাতে পানিতে খপখপ শব্দ শুনে স্ত্রী ডেকে তোলেন। বারান্দায় টিনের চালার উপর ঘুমাচ্ছিলেন উনারা। নিশ্চিত বড়ো সাইজের কাতল মাছ হবে। কোনোকিছু বাছবিচার না করে কুঁচ মারলেন। একদম গিয়ে বিঁধলো বুক বরাবর। কৌশলে আরও আঁটালেন যেনো কোনোভাবেই ছুটতে না পারে। রাতের আবছা আলোতে বোঝা যাচ্ছে না কী মাছ, কত বড়ো মাছ।

টেনে তুললেন, কাছে আনলেন। অন্ধকারে কেমন যেনো দেখা যায়। হাত-পাওয়ালা মাছ মনে হচ্ছে। কুমির, দেও দানব নয়তো? স্ত্রীকে ধমক দিয়ে বলেন, ওই বাতি জ্বালা তাড়াতাড়ি। 

ভেজা দিয়াশলাই কয়েক বার চেষ্টা করে বাতি জ্বালান সালামের স্ত্রী। বাতির আলোতে কুঁচে ধরা শিকার দেখে শরীর শিউরে ওঠে। 
সর্বনাশ, এতো শিশু বাচ্চা। 
সালামের স্ত্রী চিৎকার করে বলে, আমার ব্যাটা কই? 
ছয় মাসের বাচ্চাকে নিয়ে ঘুমাচ্ছিলেন। বুকের দুধ খেতে খেতে ঘুমিয়ে গেছে। ঘুমের ঘোরে কোল ফসকে বারান্দার চালা থেকে পানিতে পড়ে গেছে।
সালামের স্ত্রীর আর্তনাদ বানভাসি মানুষের কানে পৌঁছায়। শত চেষ্টা করেও একমাত্র ছেলের বুক থেকে কুঁচ ( ট্যাটা )  খুলতে পারেনি।

ডেস্ক রিপোর্ট 

Post a Comment

أحدث أقدم