-রেডিও শহর ডেস্ক
ইতিহাসের_খোঁজে - ১৪৬
ঢাকার অদূরে সাতগ্রাম জমিদার বাড়ি, সাতগ্রাম আড়াইহাজার, নারায়ণগঞ্জ
এ বাড়িতে পা রাখতেই কেমন যেন একটা অদ্ভুত অনুভূতি গা ছম ছমে ব্যাপার, মেঘনা নদীর কূল ঘেষা এই উপজেলার স্থানীয়দের কাছে নানান গল্প শোনা যায় এ বাড়িটি ঘিরে। স্থানীয়রা এ বাড়িটিকে মনোরোমা বাস বা বাবুর বাড়ি নামে চিনে। ধ্বংশপ্রাপ্ত এ বাড়িটি ঠিক কবে তৈরী হয়েছিল সে বিষয়ে সঠিক কোন তথ্য নেই তবে স্থানীয়দের মতে এটি ব্রিটিশ শাসনামলের শুরুর দিকের বলে ধারনা করা হয়, এ বাড়িটির দোতলার সম্মুখ অংশে টানা কাঠের বারান্দা, পাশে ও বাড়ির ভিতরে পুকুর।
ব্রিটিশ আমলে ডেপুটি মেয়র ছিলেন শ্রী শরৎ গুপ্ত, তার নামে পুরান ঢাকায় অবস্থিত লক্ষ্মীবাজারএ শরৎ গুপ্ত রোড রয়েছে, তারই বড় ছেলে শ্রী যোগেশ গুপ্ত এর এই সাতগ্রামের বাড়িটি, তার বংশধররা এলাকায় কাপড়, সুতা ও পাট এর ব্যাবসা করে বিশাল সম্পত্তির মালিক হন, তারই এক উত্তরসুরী ছিলেন অত্যাচারী বাড়িতে রয়েছে কুয়ো, পুকুর, প্রচুর গাছ ও সুরঙ, যদিও এটি কালের বিবর্তনে চাপা পরে গেছে, কথিত আছে কর না দিতে পারলে জমিদার এর পেয়াদারা নিরীহ প্রজাদের ধরে এনে এখানে ফেলে রাখা হত. এক আমাবস্যার রাতে জমিদার বাবুর স্ত্রী, পর পর দুই সন্তান অজানা কারনে এ বাড়িতে রহস্যজনক ভাবে মৃত্যুবরণ করে, আর সে থেকে তারা এ বাড়িটি অপয়া মনে করতেন, এরপর থেকে বাড়িটিতে বিভিন্ন ধরনের দু:ঘটনা হতে থাকে হয়ত পরিবারের কারো কারসাজি থাকতে পারে, রাত এর বেলা অদ্ভুত ধরনের আওয়াজ পাওয়া যেত. ১৯৪৭ সালের দেশ ভাগের সময় এ বাড়ির পরিবারের সদস্যরা কলকাতা চলে যান আর কিছু পরিবার নারায়ণগঞ্জ সহ পুরান ঢাকা বসবাস করেন, সেদিন থেকে এ বাড়িটি পরিত্যাক্ত হয়ে রয়েছে।
কিছুদিন এ বাড়িটির কিছু অংশে বিদ্যালয় হিসেবে ব্যাবহার করা হয় কিন্তু এক দু:ঘটনার কারনে বাড়িটির পশ্চিম পাশে বিদ্যালয়টি স্থানান্তরিত করা হয়, ১৯৭১ সালে বাড়িটির মাঠে মুক্তি যোদ্ধাদের ক্যাম্প হিসেবে ব্যাবহার করা হয়েছিল, বর্তমানে সাতগাও প্রাথমিক বিদ্যালয়টি জমিদার বাড়ির জমির উপর স্থাপন করা হয়।
গ্রামবাসীরা এখনো নাকি এ পরিত্যাক্ত বাড়িটি থেকে বিভিন্ন ধরনের আওয়াজ শুনতে পান বিশেষ আমাবস্যার রাতে আরো বেশি, এ নিয়ে লোক মুখে ভূত প্রেত এর গল্পগুলোতো রয়েছেই, এ জন্য রাতের বেলা এ বাড়িটির আশে পাশেও কেউ যান না।
**যতটুকু অবশিস্ট আছে এটি অজত্নে অবহেলায় একদিন নিশ্চিন্হ হয়ে যাবে, আর বেশিরভাগ জমি বেহাত হয়ে গেছে শুধু বাড়িটির সামনে প্রাথমিক স্কুল রয়েছে, এভাবেই হারিয়ে যাচ্ছে চিরতরে ঐতিহাসিক নিদর্শন গুলো।
ডেস্ক রিপোর্ট
সৌজন্যে বাদুস
إرسال تعليق