সেই সময় নিয়ে ভাবুন, যখন অতল সাগরের বুকে একটি প্রকান্ড সাবমেরিনের মধ্যে অক্সিজেন বিহীন ৫৩ আরোহীর আপনিও একজন!
যখন দেখলেন সকাল হতে হতে সবাই যেন কেমন উদ্ভট আচরণ করছে, সবাই মৃত্যুর জন্য পুরো প্রস্তুত হয়ে গেছে। যখন দেখলেন সবাই বেঁচে থাকার আশা ছেড়ে দিয়ে মহান আল্লাহ তায়লার ডাকে সাড়া দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে, আচ্ছা তখন আপনি কি ভাবতেন?
যখন জানতে পারলেন, আপনাদের খোজার জন্য ডজন ডজন জাহাজ নিয়ে সাগরের বুকে চষে বেড়াচ্ছে কিন্তু আপনাদের খুজে পাচ্ছে না, আবার শুনলেন আমেরিকার নৌবাহিনীও এসেছে আপনাদের উদ্ধার করার জন্য কিন্তু আপনাদের খুজে পাচ্ছে না, তখন কেমন অনুভব করতেন?
২৪ ঘন্টাই সময় ছিলো অক্সিজেন ফুরিয়ে যেতে আর সকাল হতে হতে ২৪ ঘন্টা শেষ হতে চলেছে, সবাই তখন মহান আল্লাহ তায়লার কাছে সাহায্য চাইছে, কেউ কেউ চিৎকার করছে, কেউবা বধির হয়ে বসে আছে, কেউবা শেষ চেষ্টা করছে সাবমেরিনটাকে উপরে উঠানোর জন্য, তখন কেমন অনুভব করতেন?
এবং এখন অক্সিজেন পুরো শেষ হয়ে গেছে, সবাই শ্বাস নিতে কষ্ট পাচ্ছে, সবাই নিজেকে বাঁচানোর জন্য ছটফট করছে, আপনিও তখন অন্যদের মতো করছেন । সবার দিকে তাকিয়ে আপনি কেঁদে দিয়েছেন, সবাইকে জড়িয়ে ধরে শেষ বিদায় নিচ্ছেন, চোখের সামনে কয়েক জনকে লুটিয়ে পড়তে দেখলেন, ঠিক ঐ শেষ মূহুর্তে আপনার অনুভব কেমন ছিলো?
একের পর এক ৫২ জন নাবিক শ্বাস নিতে না পেরে ছটফট করতে করতে শহীদ হয়ে গেলো, আপনার শক্তিও প্রায় শেষ, আপনিও শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন। পুরো একটি ট্রাডেজির অবসান হলো। 😔
যদিও এটা একটা কাল্পনিক কাহিনি কিন্তু বাস্তবতা হয়তো এরকমই হয়েছে। এই মারাত্মক ট্রাডেজির মধ্যে মানুষের আচরন, ইচ্ছা কেমন হয় সেটাই একবার ভাবুন নিজেকে নিয়ে।
এতক্ষণ বললাম ইন্দোনেশিয়ার হারিয়ে যাওয়া সাবমেরিন নিয়ে। সেটার মধ্যে ৫৩ জন নাবিক ছিলো। সব নাবিকই অক্সিজেন সংকটে শহীদ হলো। আল্লাহ তায়লা তাদের সবাইকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন।
সুত্রঃ শাহেদ গনির পেইজ থেকে
আসুন তবে মুল ঘটনাটা জানা যাক
ইন্দোনেশিয়ার একটি সাবমেরিন দুইদিন আগে ৫৩ জন নাবিক নিয়ে রুটিন পেট্রোলিং চলাকালীন বিকল হয়ে হারিয়ে যায়। সাবমেরিনটিতে ৭২ ঘণ্টার অক্সিজেন ছিলো, যার মধ্যে ৪৮ ঘণ্টা শেষ। আর বাকি ২৪ ঘণ্টার ভিতরে এটিকে খুজে উদ্ধার করা না গেলে ভেতরে থাকা ৫৩ জনই মারা জাবেন, দুর্ভাগ্যবসত সাবমেরিন রেস্কিউ ক্যাপাবিলিটি দেশটির নেই, অনেক দেশই সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে, তবে সময় গড়িয়ে যাচ্ছে।সাবমেরিনটি আনুমানিক ৭৫০-১০০০ মিটার গভীরে তলিয়ে আছে, অত গভীরতা থেকে এটিকে উদ্ধার করাটাও কষ্টসাধ্য এবং সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। যেহেতু সাবমেরিনটি বিকল এটির দরজা খুলে নাবিকরা বের হতে পারবেননা কারণ সাবমেরিনের দরজা খুলতে ইঞ্জিনের হাইড্রলিক পাওয়ার লাগে, আর যদি বের হতেও পারেন ১০০০ মিটার গভীরতা থেকে কোনো মানুষের পক্ষে পানির উপরে উঠে আসা সম্ভব না, ২৪ ঘণ্টার ভেতর উদ্ধার করা না গেলে কর্তৃপক্ষ তাদেরকে মৃত বলে ঘোষণা করবে। আসেন তাদের জন্য দুয়া করি।
তাদের অক্সিজেন শেষ হবে আনুমানিক শনিবার ভোর ৩ টায়
إرسال تعليق